breaking

Sunday 18 July 2021

বাঙালী বীর বিজয় সিংহ লঙ্কা জয়ের পর নাম রাখলেন সিংহল

“একদা যাহার বিজয় সেনানী হেলায় লঙ্কা করিল জয়,
একদা যাহার অর্ণবপোত ভ্রমিল ভারত সাগরময়,
তুই কি না মাগো তাদের জননী, তুই তো না মাগো তাদের দেশ!
কিসের দুঃখ কিসের দৈন্য কিসের লজ্জা কিসের ক্লেশ?”
       বাঙালী জাতির বীরত্বের কাহিনী বা বীরের সংখ্যা অগণিত, কিন্তু দুঃখের বিষয় তা অধিকাংশ মানুষের কাছে তা অজানা। মানুষ যে শুধুমাত্র এই কাহিনী সম্বন্ধে জানতে উদাসীন তা নয় বরং তাদেরকে জানাবার ব্যবস্থাও করা হয় না। পাঠ্যসূচিতে বীরের কাহিনী থাকলেও তা অধিকাংশই ভিন জাতীর।
    বাঙালির অগণিত অজানা বীরেদের মধ্যে অন্যতম অগ্রদূত বাংলার রাজা বাঙালী রাজা বিজয় সিংহ। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে বিজয় সিংহ ছিলেন বঙ্গদেশের রাজা। তাঁর শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর অন্যতম ছিল তাঁর নৌ বাহিনী। মহারাজা সিংহবহু যখন সিংহাসনে ছিলেন তখন তার পুত্র বিজয় সিংহের নামে প্রজাদের উপর উৎপীড়ন ও নিপীড়নের অসংখ্য অভিযোগ আসতে থাকে। এই অভিযোগের ফলে সিংহবাহু বিজয় সিংহ কে রাজ্য ত্যাগের আদেশ দেন।
     মাত্র সাতশো সেনা নিয়ে বিজয় সিংহ রণতরীতে করে সমুদ্রে ভেসে যায়। ক্রমশ দক্ষিনে অগ্রসর হতে হতে লঙ্কা দ্বীপে গিয়ে পৌঁছায়। সেখানে অবতরণের সাথে সাথে সেখানকার রাজা বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, বেঁধে যায় বিরাট যুদ্ধ। মাত্র সাতশো সেনা নিয়ে তিনি লঙ্কার রাজা কে পরাস্ত করেন এবং সেখানকার নতুন নাম দেন “সিংহল”। এখান থেকেই সিংহলি ইতিহাসের সূচনা হয়। বিজয়সিংহের এই জয়ের কাহিনী বৌদ্ধ গ্রন্থ দ্বীপবংশ, মহাবংশ প্রভৃতি গ্রন্থে উল্লেখ আছে।
বিজয় সিংহের এই জয়ের কাহিনী উল্লেখ করেই সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত লিখছেন--
 “আমাদের ছেলে বিজয় সিংহ লঙ্কা করিয়া জয়,
সিংহল নামে রেখে গেছে নিজ শৌর্য্যের পরিচয়।”